রাজনীতির ময়দানে তিন প্রার্থীর টক্কর!

অরূপ কুমার মাজী, জেএনএফ, ঝাড়গ্রাম : রাজনীতির ময়দানে একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তিন প্রার্থী। রবিবার ঝাড়গ্রাম জেলা শহরের রবীন্দ্র পার্কের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিজেপি এবং আইএসএফ তিন দলের প্রার্থী মিলিত হয়েছিলেন। কিন্তু এই মিলিত হওয়ার মাঝে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার ঠান্ডা লড়াই প্রকাশ্যে এল। রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্রপার্কে বাহা মা মড়েঃর অনুষ্ঠানে বিজেপির প্রার্থী প্রণত টুডু, তৃণমূলের প্রার্থী কালীপদ সরেন, আইএসএফের প্রার্থী বাপি সরেন যোগ দিয়েছিলেন।
প্রথমে কালীপদ ধামসা বাজাতে শুরু করেন। তারপর প্রণত ধামসা বাজাতে শুরু করেন। তারপর বাপি রেগড়া বাজাতে শুরু করেন। কিন্তু প্রণত ও বাপি পাশাপাশি থাকলেও কালীপদ একপাশে ছিলেন। প্রণত পরে বাজাতে শুরু করলেও একসময় প্রণতের পিছনে পড়ে যান কালীপদ। প্রণতকে ঘিরে সবাই ধামসা মাদল বাজাতের থাকে । কিছুক্ষণ পর কালীপদ ধামসা বাজানো ছেড়ে দেন। কালীপদ ছেড়ে দিলেও প্রণত ও বাপি দু’জনেই বাজাচ্ছিলেন। দু’জনের সঙ্গে নাচের তালে নাচ করছিলেন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার মা চুনিবালা হাঁসদা। নাচ এবং ধামসা মাদলের তালে যখন সবাই মেতে উঠেছিল তখন কালীপদ ভীড় থেকে সরে এসে পুজো দেখতে শুরু করেন। এদিন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাজনা বাজানোর পাশাপাশি নিজেদের দলের সঙ্গী দের নিয়ে প্রত্যেক প্রার্থী সময় মত জনসংযোগ পর্বও সারেন । এমনকি পরে আদিবাসী মানুষদের কাছে মন পেতে প্রণত মাথায় কাপড় বেঁধে শালগাছের ডাল গুঁজে তাঁদের সাথে ধামসা মাদল বাজান । রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, একটি সমাজের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ওই সমাজের মানুষের উপস্থিতি থাকবে চোখে পড়ার মতোই, আজ সেই উপস্থিতির ভীড়কে কেউ হালকাভাবে না নিয়ে তিন প্রার্থীই নিজেদেরকে সকাল সকাল ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত করলেন। এবং পূজা অর্চনার আড়ালে প্রচার এবং জনসংযোগ পর্বও সারলেন এবং একে অপরের উপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করতেও পিছপা হলেন না তিন প্রার্থী।তৃণমূলের প্রার্থী কালীপদ সোরেন বলেন, “এটা আমার গ্রামের মত। আমি এখানে বরাবরই আসি। বিজেপি প্রার্থী তো কোনও দিনই এখানে আসেন না। ভোটের জন্য এখানে এসেছেন”।আইএসএফ প্রার্থীকে কটাক্ষ করে কালীপদ বলছেন, “উনি পরিযায়ী পাখি। ভোট ফুরোলে পরে আর দেখা পাওয়া যাবে না”।
অপরদিকে বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডু বলেন, “কে কখন আসে যায় আমি জানি। আমি আমার মত করে পুজো গুলিতে যাই । উনার চোখে সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে তাই হয়তো উনি দেখতে পাচ্ছেন”।
আইএসএফ প্রার্থী বাপি সরেন তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরনের কটাক্ষের উত্তরে বলেন “আমি পরিযায়ী হলে ইউসুড পাঠান, কীর্তি আজাদ, শত্রুঘ্ন সিনহা কে কি বলবেন? এখানে আমার কর্মস্থল । তাই এটা আমার দ্বিতীয় বাসস্থান ও জন্মভূমি। ধর্মীয় জায়গায় তৃণমূল প্রার্থী রাজনীতি করচেন । বাপি আরও বলছেন, ২০১১ সালের পর জঙ্গলমহলে প্রায় ৩৩ হাজার পরিযায়ি শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে। এই পরিযায়ি শ্রমিকের জন্য হয়ত তৃণমূল সব জায়গায় শুধু পরিযায়ী দেখতে পাচ্ছে”।

Recent Posts

স্নান করতে নেমে বিপত্তি, ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও তলিয়ে যাওয়া যুবকের মিলল না কোন সন্ধান!

অরূপ কুমার মাজী, জেএনএফ, সরডিহা : বন্ধুদের সাথে স্নান করতে নেমে কংসাবতী নদীর জলে তলিয়ে গেল এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে…

1 year ago

শরীর সায় দিলে ‘দিদি’র সঙ্গে সাক্ষাৎ! অনুগামীদের ভিড়, বাড়ির কার্যালয়ে বসে কেঁদে ফেললেন অনুব্রত

দুই বছরেরও বেশি সময় পরে বীরভূমে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগারে এবং তার পর প্রায় দেড় বছর দিল্লিতে তিহাড়…

1 year ago

‘সঞ্জয় লীলার কোনও নীতি আদর্শ নেই!’ পরিচালকের বিরুদ্ধে কেন ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন করিনা?

করিনার সৌন্দর্যে প্রথম থেকেই মুগ্ধ ছিলেন পরিচালক। ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির জন্য তাঁর প্রথম পছন্দ ছিলেন করিনাই। কিন্তু…

1 year ago

মিছিল করে মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ স্কুল পড়ুয়াদের! শোকজ় নোটিস পেয়ে ক্ষোভ একাধিক জেলায়

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে কচিকাঁচা পড়ুয়ারা পা মেলিয়েছে কেন? এই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্কুলকে শোকজ় নোটিস পাঠিয়েছে শিক্ষা…

1 year ago

বালি মজুত করার অভিযোগ পেয়ে শুকজোড়া এলাকায় ভূমি অধিকারীকের হানা!

জেএনএফ, চুবকা : অবৈধভাবে বালি মজুত করার অভিযোগ পেয়ে ঝাড়গ্রাম ব্লকের শুকজোড়া এলাকায় মানিকপাড়া বিট হাউসের পুলিশকে সাথে নিয়ে হানা…

1 year ago