তুফানগঞ্জের খোরারপারে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার, বর্ষা শুরু হতে না হতেই চিন্তিত ২৫০টি পরিবারের

জেএনএফ ওয়েব ডেস্ক : নদী পাড়াপাড়ে ভরসা বাঁশের সাঁকো। হয় নি সেতু। তাই জীবনের ঝুকি নিয়ে সাঁকোতেই ভরসা গ্রামবাসীদের। আর এভাবেই বহু বছর ধরে সাঁকো আকড়ে চলে গ্রামবাসীরা৷ যখনি বর্ষা শুরু হয় তখনি তাদের দুর্ভোগ বাড়ে। কিন্তু সেই দুর্ভোগের জন্য চিন্তিত গোটা গ্রাম।
জানা গেছে, তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের অন্দরান ফুলবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম অন্দরান ফুলবাড়ি ৯/ ১৮৫ নং বুথের খোরারপার ও যমেরডাঙ্গা এলাকার মধ্য দিয়ে প্রভাহিত হয়েছে মরা গদাধর নদী। দীর্ঘ প্রায় চারদশক ধরে নদীর গতি পথ পরিবর্তন হয়ে নদীটি ছরায় পরিনত হয়েছে। গ্রামবাসীরা সেই ছরার পারের নাম দেন “সাত বইনের পার”। বৈশাখ মাস থেকে কার্তিক মাস বর্ষার ৭ মাস ছরাটি ভয়ংকর রুপ ধারন করে। তুফানগঞ্জ শহর লাগোয়া খোরারপার এলাকায় প্রায় ২৫০টি পরিবারের বসবাস ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারা পার করতে অনেক সময় দূর্ঘটনার ফলে আহত হয়েছেন অনেকে। কৃষকদের উৎপাদিত শস্য মাথায় করে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে বিক্রি করতে তুফানগঞ্জ বাজারে নিয়ে যেতে হয়। এমনকি অসুস্থ রোগীদের নিয়ে যেতে সমস্যায় পরতে হয়। রোগীর পরিজনেরা প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরপথে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
গ্রামবাসীদের দীর্ঘ দিনের দাবি, কালভার্ট অথবা ব্রীজ তৈরী করা হোক। এলাকার প্রশাসনিক আধিকারিক বহুবার জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
এবিষয়ে গ্রামের বাসিন্দা ললিত বর্মন বলেন “আমাদের এখানে সমস্যা হল সাত বৈনের পার যে নদী, বর্ষার সময় বৈশাখ মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত এই নদীতে অনেক জল হয়। সেই সময় জিবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সামনে তুফানগঞ্জ শহর সেখানে সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাট হয়। আমাদের এখানের গ্রামের কৃষক ধান পাট ইত্যাদি ঠ্যালা-ভ্যান দিয়ে নিতে হয়, কিন্তু এখানে বাঁশের সাঁকো থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। মাথায়-কাঁধে করে পার করতে হয়। আর তা না হলে প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার ঘুরে নিয়ে যেতে হয়। প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ উদ্যোগ নেয়নি। শুধু বলে হবে হবে এইভাবেই চলে যাচ্ছে কিন্তু হচ্ছে না।’’
এবিষয়ে অন্দরান ফুলবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ধারানী কান্ত বর্মন এবিষয়ে বলেন “এটা দীর্ঘদিন সমস্যা, বর্ষার সময় ৬ মাস নদীতে জল থাকে। নদীর ওই পারে অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা তুফানগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করে তাদের যাতায়াতের সমস্যা। বর্ষার সময় তারা অনেকটাই ঘুরপথে ৩-৪ কিলোমিটার পথ ঘুরে তুফানগঞ্জ শহরে পৌঁছায় তাদের যাতায়াতের অসুবিধায় পরতে হয়। আর এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে বাঁশের সাকো থেকে পড়ে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমাদের এই এলাকার দীর্ঘদিনের দাবি এখানে কালভাট বা একটা ব্রিজ করতে হবে। প্রশাসন কে অনেকবার বলা হয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্ত তার সুরাহা হয়নি। গ্রামের বাসিন্দারা জানান এখানে একটি ব্রিজ হলে আমরা খুব উপকৃত হবো।

Recent Posts

স্নান করতে নেমে বিপত্তি, ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও তলিয়ে যাওয়া যুবকের মিলল না কোন সন্ধান!

অরূপ কুমার মাজী, জেএনএফ, সরডিহা : বন্ধুদের সাথে স্নান করতে নেমে কংসাবতী নদীর জলে তলিয়ে গেল এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে…

1 year ago

শরীর সায় দিলে ‘দিদি’র সঙ্গে সাক্ষাৎ! অনুগামীদের ভিড়, বাড়ির কার্যালয়ে বসে কেঁদে ফেললেন অনুব্রত

দুই বছরেরও বেশি সময় পরে বীরভূমে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগারে এবং তার পর প্রায় দেড় বছর দিল্লিতে তিহাড়…

1 year ago

‘সঞ্জয় লীলার কোনও নীতি আদর্শ নেই!’ পরিচালকের বিরুদ্ধে কেন ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন করিনা?

করিনার সৌন্দর্যে প্রথম থেকেই মুগ্ধ ছিলেন পরিচালক। ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির জন্য তাঁর প্রথম পছন্দ ছিলেন করিনাই। কিন্তু…

1 year ago

মিছিল করে মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ স্কুল পড়ুয়াদের! শোকজ় নোটিস পেয়ে ক্ষোভ একাধিক জেলায়

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে কচিকাঁচা পড়ুয়ারা পা মেলিয়েছে কেন? এই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্কুলকে শোকজ় নোটিস পাঠিয়েছে শিক্ষা…

1 year ago

বালি মজুত করার অভিযোগ পেয়ে শুকজোড়া এলাকায় ভূমি অধিকারীকের হানা!

জেএনএফ, চুবকা : অবৈধভাবে বালি মজুত করার অভিযোগ পেয়ে ঝাড়গ্রাম ব্লকের শুকজোড়া এলাকায় মানিকপাড়া বিট হাউসের পুলিশকে সাথে নিয়ে হানা…

1 year ago